থ্যালাসেমিয়া (Thalassemia) মূলত একটি জিনগত রক্তের রোগ, যা কোষের ডিএনএ-তে পরিবর্তনের (মিউটেশন) কারণে ঘটে। এই পরিবর্তনটি হিমোগ্লোবিন তৈরির প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি করে।
হিমোগ্লোবিন হলো রক্তের একটি প্রোটিন যা রক্তকণিকাগুলিকে অক্সিজেন বহন করতে সহায়তা করে। থ্যালাসেমিয়া রোগের কারনে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন স্বাভাবিকভাবে হয় না, যার ফলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমান কমে যায়, যা রক্ত স্বল্পতা বা অন্যান্য জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারে।
হিমোগ্লোবিন গঠনে দুই ধরনের প্রোটিনের ভূমিকা রয়েছে, আলফা এবং বিটা প্রোটিন। থ্যালাসেমিয়ার ধরন নির্ভর করে এই দুটি প্রোটিনের অভাব বা বিকৃতি ঘটার ওপর। আলফা থ্যালাসেমিয়া হলো যখন শরীরে আলফা হিমোগ্লোবিনের অভাব থাকে এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া হলো যখন শরীরে বিটা হিমোগ্লোবিনের অভাব ঘটে।
এই আর্টিকেলে থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
থ্যালাসেমিয়া একটি জেনেটিক রোগ, যেখানে হিমোগ্লোবিন তৈরির প্রক্রিয়া কমে যায়। এটি মূলত আলফা ও বিটা গ্লোবিন চেইনের জন্য দায়ী দুটি জিনের ত্রুটির কারণে হয়। মানবদেহে এই জিন দুটি ১১তম এবং ১৬তম ক্রোমোজোমে অবস্থান করে এবং পিতা-মাতার কাছ থেকে সন্তানদের মধ্যে আসে। যদি কোনো এক জিনে ত্রুটি থাকে, তবে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কিছুটা কম হয় এবং রোগী থ্যালাসেমিয়ার বাহক বা মাইনর হন। কিন্তু যদি দুটি জিনেই ত্রুটি থাকে, তাহলে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ অনেক কমে যায় এবং রক্তকণিকা দ্রুত ভেঙে যায়, ফলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় এবং শিশুকালে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তাদেরকে থ্যালাসেমিয়া মেজর বলা হয়, যাদের নিয়মিত রক্ত গ্রহণ করতে হয়।
থ্যালাসেমিয়ার বিভিন্ন ধরন রয়েছে, এর মধ্যে হিমোগ্লোবিন-বিটা এবং হিমোগ্লোবিন-ই বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেশি দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রায় ৭% মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক এবং বর্তমানে এটি বাড়ছে। থ্যালাসেমিয়ার উচ্চ প্রবণতার কারণ হিসেবে পারিবারিক বিয়ে, বাহক-বাহক বিবাহ এবং থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে অজ্ঞতা উল্লেখযোগ্য। থ্যালাসেমিয়ার বাহকরা যদি একে অপরকে বিয়ে করেন, তাদের সন্তানের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
একটি ছোট পদক্ষেপ আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুস্থ জীবন দিতে পারে। থ্যালাসেমিয়ার মতো জেনেটিক রোগের ঝুঁকি কমাতে এবং সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে আজই পরীক্ষা করান।
💡 কেন থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করবেন?
আপনার অজান্তে যদি আপনি বা আপনার সঙ্গী থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন, তবে ভবিষ্যতে সন্তানের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিয়ের আগে পরীক্ষা করিয়ে নিলে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।
অর্ডার করুন আজই
🚑 আমাদের সুবিধা:
✅ ঘরে বসে নমুনা সংগ্রহ – আপনার সময় বাঁচান।
✅ নির্ভরযোগ্য ল্যাব রিপোর্ট – ১০০% নির্ভুলতার নিশ্চয়তা।
✅ দ্রুত এবং নিরাপদ সেবা – ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্যাম্পল কালেকশন ও রিপোর্ট প্রদান।
থ্যালাসেমিয়া প্রধানত দুই প্রকারে বিভক্ত-
এই ধরনের থ্যালাসেমিয়াতে হিমোগ্লোবিনের আলফা গ্লোবিন চেইন কম তৈরি হয় বা তৈরি হয় না। আলফা থেলাসেমিয়ার নানা স্তর রয়েছে, যেমন-
মাইক্রোথেলাসেমিয়া: একটি আলফা গ্লোবিন জিনের ত্রুটি থাকে, কিন্তু গুরুতর সমস্যা হয় না।
হেমোগ্লোবিন হ (Hb H): তিনটি আলফা গ্লোবিন জিনের ত্রুটি থাকে, যা মাঝারি থেকে গুরুতর অ্যানিমিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
আলফা থেলাসেমিয়া মেজর: চারটি আলফা গ্লোবিন জিনের ত্রুটি থাকে, যা গুরুতর রক্তস্বল্পতা এবং শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এই ধরনের থ্যালাসেমিয়াতে বিটা গ্লোবিন চেইন কম তৈরি হয় বা তৈরি হয় না। এটি তিনটি প্রধান উপধারায় বিভক্ত-
বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর (Beta Thalassemia Minor): এতে রোগী সাধারণত কোনো গুরুতর লক্ষণ অনুভব করেন না, তবে রক্তস্বল্পতা থাকতে পারে।
বিটা থ্যালাসেমিয়া ইন্টারমিডিয়া (Beta Thalassemia Intermedia): এই অবস্থায় রোগীর মাঝামাঝি উপসর্গ থাকে এবং মাঝে মাঝে রক্তের প্রয়োজন হতে পারে।
বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর (Beta Thalassemia Major): এটি সবচেয়ে গুরুতর অবস্থান, যেখানে রোগীকে নিয়মিত রক্ত গ্রহণ করতে হয় এবং এটি শিশুকালে লক্ষণ প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে রোগীর অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও, থ্যালাসেমিয়ার কিছু আরো উপধারা এবং মিউটেশন থাকতে পারে, তবে এগুলো সাধারণত আলফা ও বিটা থ্যালাসেমিয়ার ভেতরে পড়বে।
থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণগুলো বিভিন্ন হতে পারে এবং রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে এর ধরন ভিন্ন হয়। সাধারণত থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. ক্লান্তি, দুর্বলতা ও অবসাদ: থ্যালাসেমিয়ার কারণে অ্যানিমিয়া দেখা দেয়, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ হয় না, যা ক্লান্তি ও দুর্বলতার প্রধান কারণ।
২. শ্বাস কষ্ট: রক্তে অক্সিজেনের অভাব শ্বাস কষ্ট তৈরি করতে পারে।
৩. পেটের ভিতরের অঙ্গের বৃদ্ধি: যকৃত ও প্লীহা বড় হয়ে যেতে পারে।
৪. ভঙ্গুর ও বিকৃত হাড়: হাড়ের কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হাড় ফাটল বা ভাঙার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। হাড়ের গঠন বিকৃত হতে পারে বিশেষ করে মুখ ও পাঁজরের হাড়।
৫. ক্ষুধা কমে যাওয়া: শরীরের অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায়।
৬. ফ্যাকাশে বা হলুদ ত্বক: হিমোগ্লোবিনের অভাবে ত্বক হয়ে পড়ে ফ্যাকাশে এবং জন্ডিসের কারণে ত্বকে হলুদ ভাব দেখা যায়।
৭. জন্ডিস: লিভারের সমস্যা বা রক্তের লোহিত কণিকার দ্রুত ভাঙ্গার কারণে চোখের সাদা অংশ ও ত্বকে হলুদ ভাব আসে।
৮. গাঢ় প্রস্রাব: লোহিত কণিকার ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হতে পারে।
৯. শিশুদের মধ্যে বিলম্বিত বৃদ্ধি: শরীরে অক্সিজেন এবং পুষ্টির অভাবের কারণে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ধীর হতে পারে।
১০. হার্টের সমস্যা: অতিরিক্ত আয়রন জমে হৃদযন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা কখনো কখনো হৃদরোগে পরিণত হয়।
এগুলো সবই থ্যালাসেমিয়ার সাধারণ লক্ষণ, তবে রোগের ধরনের ওপর ভিত্তি করে এগুলোর তীব্রতা ভিন্ন হতে পারে।
থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ের জন্য ডাক্তাররা সাধারণত কয়েকটি পরীক্ষা করতে পরামর্শ দেন:
সিবিসি(CBC) পরীক্ষা থ্যালাসেমিয়া শনাক্তে সহায়ক, কারণ এটি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, লাল রক্তকণার আকার ও সংখ্যা, রেটিকুলোসাইট সংখ্যা, এবং আরডিডাব্লিউ (রক্তকণার আকারের বৈচিত্র্য) পর্যালোচনা করে।
হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস পরীক্ষা রক্তে উপস্থিত বিভিন্ন ধরনের হিমোগ্লোবিন শনাক্ত ও পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি থ্যালাসেমিয়া বা অন্যান্য হিমোগ্লোবিনজনিত রোগ নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পেরিফেরাল ব্লাড স্মিয়ার টেস্টে মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে রক্তের কোষ ও প্লেটলেটগুলোর অবস্থা দেখা হয়। যা থ্যালাসেমিয়া শনাক্তে সহায়ক।
আয়রন অধ্যয়ন হল রক্ত পরীক্ষা যা আপনার শরীরে কতটা আয়রন রয়েছে তা দেখে।
শিশুর জন্মের আগেই থ্যালাসেমিয়া থাকলে তা শনাক্ত করার জন্য কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব। এই পরীক্ষাগুলি অন্তর্ভুক্ত:
কোরিওনিক ভিলাস স্যাম্পলিং (সিভিএস):এই পরীক্ষায় গর্ভাশয়ের প্ল্যাসেন্টার থেকে একটি ছোট অংশ সংগ্রহ করা হয় এবং সাধারণত গর্ভাবস্থার ১১ তম সপ্তাহে করা হয়।
অ্যামনিওসেন্টেসিস: এই পরীক্ষায় গর্ভস্থ শিশুর চারপাশের অ্যামনিওটিক তরল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যা সাধারণত গর্ভাবস্থার ১৬ তম সপ্তাহে করা হয়।
এই পরীক্ষাগুলো থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং চিকিৎসা শুরুর আগে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে। থ্যালাসেমিয়ার সিবিসি পরীক্ষা এখন ঘরে বসেই করতে পারবেন আরোগ্য অ্যাপের মাধ্যমে। অর্ডার করলে ঘরে এসেই ল্যাব কর্মীরা স্যাম্পল নিয়ে যাবে।
থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা দুটি প্রধানভাবে ভাগ করা যায়: সাপোর্টিভ (সহায়ক) এবং কিউরেটিভ (শিফ্টকারী)।
রক্তদান: থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগীদের নিয়মিত রক্ত প্রয়োজন, যাতে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৯ গ্রাম বা তার বেশি থাকে। না হলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয় এবং শারীরিক বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়।
আয়রন চিলেটিং থেরাপি: থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণে শরীরে নিয়মিত রক্তদান ও অতিরিক্ত আয়রন জমে যায়, যা এন্ডোক্রাইন সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে। এটি থাইরয়েড, পিটুইটারি গ্রন্থি, ও অন্যান্য হরমোন উৎপাদনকারী গ্রন্থির কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি করে। এর ফলে হাইপোথাইরয়ডিজম (থাইরয়েড হরমোনের অভাব), বৃদ্ধির সমস্যা, গর্ভধারণের সমস্যা এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য নিয়মিত আয়রন চেলেটিং থেরাপি, হরমোন পরীক্ষা, এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এন্ডোক্রাইন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিয়মিত রক্তদানের পর শরীরে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যায়। আয়রন বের করার জন্য আয়রন চিলেটিং ঔষধ যা শরীরের অতিরিক্ত আয়রন দূর করতে সহায়তা করে।
প্রতিরোধে নিয়মিত আয়রন চিলেটিং থেরাপি, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাদ্য এবং হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করা জরুরি। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের মধ্যে অস্টিওপোরোসিস সাধারণত অতিরিক্ত আয়রন সঞ্চয়, আয়রন চিলেটিং থেরাপি, হরমোনাল পরিবর্তন এবং অপর্যাপ্ত পুষ্টির কারণে ঘটে। এটি হাড়ের ঘনত্ব কমিয়ে হাড়কে ভঙ্গুর করে তোলে।
হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর ওষুধ: Hydroxyurea বা Thalidomide মতো ওষুধ হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে এবং রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা কমাতে পারে।
লুসপ্যাটারসেপ্ট: এটি এক ধরনের ইনজেকশন যা উন্নত দেশে ব্যবহার হয়, যার মাধ্যমে রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা কমানো সম্ভব।
বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা জিন থেরাপি থ্যালাসেমিয়ার একমাত্র স্থায়ী চিকিৎসা। এই চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হতে পারে এবং পরবর্তীতে রক্তদানের প্রয়োজন হয় না। তবে, এই চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং আমাদের দেশে এর প্রসার কম।
হিমোগ্লোবিন ই ট্রেইট (Hemoglobin E Trait) একটি বংশগত অবস্থা, যেখানে একজন ব্যক্তি হিমোগ্লোবিন ই (Hb E) নামক এক প্রকারের হিমোগ্লোবিন তৈরি করেন। এই অবস্থায়, সাধারণত কোনো বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হয় না, কিন্তু এটি কিছু ক্ষেত্রে বাহক হিসেবে থাকে, অর্থাৎ ব্যক্তি নিজে রোগী না হলেও সেই জিন সন্তানকে দিতে পারে। হিমোগ্লোবিন ই ট্রেইট সাধারণত কোনো বড় ধরনের রক্তস্বল্পতা বা সমস্যা সৃষ্টি করে না, তাই বিশেষ কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তজনিত রোগ, যার জন্য নিয়মিত চিকিৎসা ও যত্ন প্রয়োজন। এর চিকিৎসার পাশাপাশি রোগটির প্রতিরোধের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম: উচ্চ ঝুঁকির জনগণের (বিশেষত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী) মধ্যে স্ক্রিনিং করা জরুরি, যাতে থ্যালাসেমিয়ার বাহক শনাক্ত করা যায়।
বিয়ের আগে পরীক্ষা: থ্যালাসেমিয়া বাহক শনাক্ত করার জন্য বিয়ের আগে পরীক্ষা করা উচিত, যাতে ভবিষ্যত সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়।
প্রিন্যাটাল পরীক্ষা: যদি বাহকরা বিয়ে করে, তবে গর্ভাবস্থার ১০-১২ সপ্তাহে প্রিন্যাটাল ডিএনএ পরীক্ষা করা উচিত, যাতে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কিত তথ্য জানা যায়।
থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা: জনগণকে থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতন করা এবং এটি প্রতিরোধযোগ্য জন্মগত রোগ হিসেবে পরিচিতি দেওয়া জরুরি।
পুষ্টির যত্ন (Nutritional Care): থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সঠিক পুষ্টির প্রয়োজন। তাদের ডায়েটে আয়রন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং যথেষ্ট ভিটামিন ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে।
এই সঠিক চিকিৎসা, সচেতনতা এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া রোগের প্রভাব কমানো সম্ভব।
থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত ও জিনগত রক্তের রোগ, যা হিমোগ্লোবিনের অভাবে শরীরের অক্সিজেন পরিবহন ব্যাহত করে। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে ক্লান্তি, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট ও হাড়ের সমস্যা সাধারণ। তবে, সঠিক চিকিৎসা, যেমন নিয়মিত রক্তদান, আয়রন চিলেটিং থেরাপি এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য থেরাপির মাধ্যমে রোগী একটি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন। থ্যালাসেমিয়ার প্রতিরোধ সম্ভব বিয়ের আগে স্ক্রিনিং ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে, যা দেশের সমাজে এই রোগের প্রভাব কমাতে সহায়ক হবে।
0
0